নাইক্ষ্যংছড়িতে ৩৪বিজিবির অভিযান চালিয়ে আসামীর ছাড়া ৫হাজার ৬শত পিস বার্মিজ ইয়াবা জব্দ

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২৫

 

আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবান:

মাদক চোরাচালান রোধে আবারও সফল অভিযান পরিচালনা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (১৮ জুলাই ২০২৫) ভোরে কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) এর অধীনস্থ বাইশফাঁড়ী বিওপি’র একটি বিশেষ অভিযানদল সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫,৬০০ পিস বার্মিজ ইয়াবা জব্দ করেছে। তবে এই অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

বিজিবির পাঠানো বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী মায়ানমার থেকে মাদকের একটি বড় চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে এমন তথ্য আগে থেকেই ৩৪ বিজিবির গোয়েন্দা শাখা পায়। এরপর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে বাইশফাঁড়ী বিওপি’র একটি বিশেষ অভিযানদল গঠন করে সীমান্ত এলাকায় ‘চিকন পাতার বাগান’ নামক স্থানে কৌশলগতভাবে ওঁত পেতে রাখা হয়।

বিজিবি জানায়, ১৮ জুলাই শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় সময় তারা দেখতে পায়, একজন ব্যক্তি কাপড়ের ব্যাগ হাতে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের দিকে প্রবেশ করছে। সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ্য করে বিজিবি সদস্যরা তাকে চ্যালেঞ্জ করলে ওই ব্যক্তি ব্যাগটি ফেলে দিয়ে দ্রুত দৌড়ে মায়ানমারের অভ্যন্তরের দিকে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে বিজিবির অভিযানদল ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ওই ব্যাগের ভিতর থেকে মোট ৫,৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। এ সময় মাদক চোরাকারবারী বা তার সহযোগীদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

বিজিবি সূত্র আরও জানায়, উদ্ধারকৃত ইয়াবাগুলো বার্মিজ উৎপাদনের এবং বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল। এর মাধ্যমে স্পষ্ট যে, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে এখনও মাদক পাচারকারীরা সক্রিয়ভাবে মাদকের চালান ঢোকানোর চেষ্টা করছে।

৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম, পিএসসি স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা আরো জোরদার করা হয়েছে। দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে চোরাচালান, মাদক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য চোরাচালানের বিষয়টি দেশের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজার, টেকনাফ ও বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে প্রায়ই বার্মিজ ইয়াবার চালান প্রবেশের চেষ্টা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিজিবির তৎপরতায় অনেক চালান আটকে দেওয়া গেলেও সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের দৌরাত্ম্য এখনও পুরোপুরি রোধ হয়নি।

সীমান্তের মানুষ অনেক সময় চোরাচালান চক্রের involvment বা মাদকের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে এই ইয়াবা নামক ভয়াবহ নেশাদ্রব্য। ফলে সীমান্তে বিজিবির এ ধরনের সফল অভিযান স্থানীয় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থা তৈরি করেছে।

বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, তথ্য প্রদান ও অপরাধ বিরোধী মনোভাব গড়ে তোলাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো সন্দেহজনক গতিবিধি বা অপরাধসংক্রান্ত তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর মাধ্যমে সমাজকে নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে জনগণের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, ৩৪ বিজিবি চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কক্সবাজার সীমান্তে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু বড় চালান জব্দ করেছে এবং বহু পাচারকারীকে আটক করেছে, যা সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখছে।