নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার ২৮ জুলাই বান্দরবান রিজিয়নের তত্ত্বাবধানে এবং বান্দরবান সেনা জোনের সার্বিক সহায়তায় লংলাইপাড়া আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এক দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
বান্দরবান রিজিয়নের চিকিৎসক মেজর লুবনা, মেজর রিফাত এবং ক্যাপ্টেন আরমান-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ক্যাম্পটি মূলত জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে আয়োজিত একটি কর্মসূচি।
এই ক্যাম্পে আশপাশের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ও গহীন অরণ্যের বিভিন্ন পাড়া থেকে কষ্টসাধ্য পথ পাড়ি দিয়ে আগত সর্বমোট ১৫৩ জন রোগী – যার মধ্যে ৬৫ জন পুরুষ, ৫৮ জন নারী ও ৩০ জন শিশু – অংশগ্রহণ করেন।
বিভিন্ন চর্মরোগ, দাঁতের সমস্যা, গাইনোকলজিক্যাল জটিলতা এবং সাধারণ শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদেরকে এই তিনজন চিকিৎসক অত্যন্ত আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদান করেন।
ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন রোয়াংছড়ি সাব জোনের কমান্ডার মেজর এম. এম. ইয়াসিন আজিজ। তাঁর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালিত হয়।
এই ক্যাম্পেইনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লংলাইপাড়া আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। পুরো কার্যক্রমটি সফলভাবে পরিচালনায় বান্দরবান সেনা জোন সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করে।
ক্যাম্পেইন এর প্রধান অতিথি মেজর এম.এম. ইয়াসিন আজিজ বলেন:
"বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু দেশের নিরাপত্তা ও
অখণ্ডতা রক্ষায় নয়, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের পাশে থেকে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এই মেডিকেল ক্যাম্প তারই একটি প্রতিফলন। পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে দুর্গম অঞ্চলের মানুষদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমাদের কর্তব্য ও দায়িত্ববোধের অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের পাশে থেকে মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা এলাকার বাসিন্দা লালমাই মারমা বলেন:
“অনেকদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলাম, কিন্তু কোথাও চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছিল না। আজ সেনাবাহিনী আমাদের এলাকায় এসে চিকিৎসা দিয়েছে, ওষুধ দিয়েছে—এটা আমাদের জন্য খুব বড় উপকার। পাহাড়ের এতো ভেতরে এসে যারা আমাদের জন্য কাজ করছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সেনাবাহিনীর প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে গেল।”
এই মহৎ উদ্যোগের মাধ্যমে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ সরাসরি সুচিকিৎসা ও মানবিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসার সুযোগ পেয়েছেন, যা সেনাবাহিনীর প্রতি স্থানীয় জনসাধারণের আস্থা, ভালোবাসা এবং পারস্পরিক সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
বান্দরবান রিজিয়ন ও সেনা জোন ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।